গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এক কয়েদির “খোঁজ নেই”
বদরুল আলম রায়হান, গাজীপুর:
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর এক কয়েদির পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অন্য আসামিদের
লকআপের পর সেখানে সেখানে একজনকে পাওয়া যায়নি। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তার সন্ধান মিলেনি। কারাগারের সিনিয়র সুপার জাহানারা বেগম সাংবাদিকদের জানান,নিখোঁজ আবু বকর সিদ্দিকের বাড়ি সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার আবাদ চ-ীপুর এলাকার তেছের আলী গাইনের ছেলে। আবু বকর সিদ্দিক ২০১১ সালের ১৫জুন
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এসেছিলেন ফাঁসির আসামি হিসেবে। ২০১২ সালের ২৭ জুলাই তাঁর সাজা সংশোধন করে তাঁকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বন্দিদের
গননাকালে তাকে পাওয়া যায়নি। ২০১৫ সালেও ওই কয়েদি কারাগার চত্বরে একবার পালিয়ে ছিলেন। পরে কারাভ্যন্তরে ট্যাংকির ভেতর থেকে
তাকে উদ্ধার করা হয়। এবারও ওই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। আমরা তাকে খুঁজছি। এ ঘটনায় শুক্রবার সকালে কোনাবাড়ি থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাশিমপুরের কারাগারের আরো একজন কমর্কতা জানান, ২০১৫ সালের ১৩ মে সন্ধ্যায়ও তিনি আত্মগোপন
করে সেল এলাকায় সেফটি ট্যাংকির ভেতরে লুকিয়ে ছিলেন। অনেক খোঁজাখুজি শেষে পরদিন তাঁকে কারগারের ৪০সেল এলাকার একটি ট্যাংকির ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর কিছুদিন তাকে কারাগারে শিকল পড়িয়ে রাখা হতো। এতে আবু বকর কিছুটা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন। পরে তাকে শিকল মুক্ত করে দেয়া হয়। কারাচত্বরে তিনি অন্যবন্দিরে সঙ্গে অনেক সময় কাজ-কর্ম করতেন। তবে তাকে মানবিক কারণে কাজের জন্য চাপ দেয়া হতো না। বৃহস্পতিবারও অন্যদের সঙ্গে মুক্ত ছিলেন আবুবকর। তবে সন্ধ্যায় বন্দিরে গননাকালে তাকে পাওয়া যায়নি। পরে, কারাগারের ৬টি ভবনের ২৪টি কক্ষে তার খোঁজ না পেয়ে সকল
বন্দিদের রুলকল করে আবু বকরের নিখোঁজ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হই। আমরা তাকে খুঁজছি। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তকে পাওয়া যায়নি।কারাগারের আরেকটি সূত্র জানান, কারাগারের দেয়ালে থাকা আগাছা পরিস্কার ও রং করার কাজে ব্যবহৃত মই দিয়ে বৃহস্পতিবার যেকোন সময় পালিয়ে যেতে পারেন আবু বকর।
কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসমলামও আবু বকর নিখোঁজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কোনাবাড়ি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার থোয়াই অংপ্রু মারমা জানান এই বিষয়ে কারা কতৃপক্ষ কোনাবাড়ি থানায় লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এই বিষয়ে কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহানারা বেগম আরো জানান পলায়নের ঘটনায় ৬ জনকে বহিষ্কার ও ছয়জনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।